রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শ্রম আইন সংশোধনে ৪১টি পয়েন্ট নিয়ে আইএলওর সাথে আলোচনা চলছে : আইনমন্ত্রী চার দশকে এই প্রথম মার্কিন-ইসরাইল জোটে ফাটল সকালের নাস্তার স্বাস্থ্যকর যেসব খাবার ‘তুফান’ ছবির বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগ, যা বললেন প্রযোজক ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা পাসপোর্ট নবায়নে তাগিদ সৌদি সরকারের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাসপাতালের লিফটে ‘৪৫ মিনিট’ আটকে রোগীর মৃত্যু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার সুপারিশ নিয়ে ভিন্ন কথা বললেন শিক্ষামন্ত্রী কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচে হতাশ করল বাংলাদেশ ছাত্ররা পিছিয়ে কেন, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
পবিত্র কুরআন ও আহলাল বাইতের প্রেম-বন্ধন……!

পবিত্র কুরআন ও আহলাল বাইতের প্রেম-বন্ধন……!

সৈয়দ হুমায়ূন কবীর: হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বিদায় হজে আরাফাতের দিন তাঁর কাসওয়া নামক উষ্ট্রিতে আরোহণ অবস্থায় খুতবা দিতে দেখেছি এবং তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘হে লোক সকল অবশ্যই আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে গেলাম, তোমরা তা ধারণ বা অনুসরণ করলে কখনও গোমরাহ হবে না।’ আল্লাহর কিতাব (আল-কুরআন) এবং আমার ইতরাত অর্থাৎ আমার আহলে বাইত।
Ñতিরমিজি শরিফ: হজরত যায়েদ ইবনে আকরাম (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) এক দিন মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী ‘খুম্ম’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে ভাষণ দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়াজ-নসিহত করলেন। তারপর বললেন, সাবধান, ‘হে লোক সকল আমি একজন মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ফেরেশতা আসবে, আর আমিও তাঁর ডাকে সাড়া দেব। আমি তোমাদের কাছে ভারী দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব। এতে হিদায়াত এবং নূর রয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অবলম্বন কর, একে শক্ত করে ধরে রেখ। এরপর তিনি কুরআনের প্রতি আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। তারপর বলেন, আর দ্বিতীয়টি হলো আমার আহলে বাইয়াত।’ আর আমি আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বাইয়াতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
Ñমুসলিম শরিফ: হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে আরও একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন ‘আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে গেলাম যা তোমরা শক্তভাবে ধারণ (অনুসরণ) করলে আমার পর কখনও গোমরাহ হবে না। তার একটি অপরটির চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর কিতাব যা আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত প্রসারিত এবং আমার পরিবার অর্থাৎ আমার আহলে বাইত। এ দুটি কখনও পৃথক হবে না কাওসার নামক ঝর্ণায় আমার সঙ্গে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত। অতএব লক্ষ্য করা হবে আমার পর এতদভয়ের সঙ্গে তোমরা কিরকম আচরণ কর।’ (মুসলিম)
Ñতিরমিযি শরিফ: হাদিস মতে দেখা যাচ্ছে, কুরআন ও আহলাল বাইত অর্থাৎ আওলাদে রাসূলগণ অবিচ্ছেদ্যÑ কখনও এদের বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। অর্থাৎ মুমিন মুসলমানদের কুরআন ও আওলাদে রাসূলগণদের মানতেই হবে। দুটো ভারী জিনিস হলোÑ আল্লাহ কুরআন ও রাসূল পাকের আহলাল বাইত। একটি অপরটির চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ। কুরআনের মর্যাদা ক্ষুণœ হলে আহলাল বাইত (আওলাদে রাসূল) কুরআনের মর্যাদা অক্ষুণœ রাখবে। অপর দিকে আহলাল বাইত অর্থাৎ আওলাদে রাসূলদের মর্যাদা ক্ষুণœ হলে আল্লাহর কুরআন অধিক মর্যাদাবান হিসেবে আওলাদে রাসূলদের মর্যাদা অক্ষুণœ রাখবে। আল্লাহর কুরআন ও আওলাদে রাসূল এ দুটির সঙ্গে প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের সম্পর্ক থাকতে হবে।
ইসলামি উম্মাহর কাউকে আহলাল বাইতের সমকক্ষ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। কেউ তার অনুগ্রহভাজন হয়ে থাকলেও তাকে তাদের সমতুল্য মনে করা যাবে না। তারা হলেন দিনের ভিত্তিমূল ও ইমানের স্তম্ভ। তারা রাসূলের বেলায়াতের অধিকারে প্রতিষ্ঠিত। রাসূলের আমানত ও উত্তরাধিকার রয়েছে তাদেরই জীবনধারায়। কাজেই ন্যায় ও সত্যের অনুসারীগণকে তাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করতেই হবে। তোমরা কুরআনকে যতটুকু মর্যাদা দাও তাদেরও ততটুকু মর্যাদা দিও এবং তৃষ্ণার্ত উট যেভাবে পানির ঝর্ণার দিকে ছুটে যায়, হেদায়েতের তৃষ্ণা মিটানোর জন্য তোমরাও সেভাবে তাদের দিকে ছুটে যেও।
Ñনাহ্জ আল বালাগা-মাওলা আলী: কুরআনের আয়াত থেকেও সুস্পষ্ট যে ‘আল্লাহর কুরআন’ ও নবীর বংশধরÑ আহলাল বাইতকে আলাদা করা যাবে না।
সূরা আলে ইমরানে বলা হয়েছেÑ(৩৩) নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম, নূহ, ইবরাহিম ও ইমরানের বংশকে মনোনীত করেছেন বিশ্ববাসীদের জন্য (৩৪) তারা পরস্পর বংশধর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
সূরা হাদিদ: হাদিসে বলা হয়েছেÑ (২৬) আর আমি নূহ ও ইবরাহিমকে রাসূল করে পাঠিয়েছি তাদের বংশধরের জন্য নবুয়াত ও কিতাব প্রদান করেছি। কিছু পথপ্রাপ্ত কিন্তু অনেকেই পাপাচারী হয়েছে।
সূরা আন’আ-ম বলছেÑ(৮৪) আমি ইসহাক ও ইয়াকুবকে দিয়েছি, তাদের প্রত্যেককে সৎপথ দেখিয়েছি, এর পূর্বে নূহকে আমি সৎ পথ দেখিয়েছিলাম, তার বংশে দাউদ, সোলাইমান, আয়ূব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকেও পাঠিয়েছিলাম। এভাবে আমি সৎলোকদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। আয়াতগুলোতে দেখা যাচ্ছে নানা বংশে রাসূল পাঠিয়ে তাদের বংশে নবুয়াত ও কিতাব প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখিত কুরআন সংশ্লিষ্ট রাসূলপাকের হাদিসে বা বাণীতে আল্লাহর কুরআন ও রাসূল পাকের আহলাল বাইতের সংশ্লিষ্টতা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। আজকের দুনিয়ায় নানা মাজহাবি ফেরকায় অন্ধ হয়ে মুসলমান আহলাল বাইতকে ভুলতে বসেছে। হে আল্লাহ আমাদের হƒদয়ে আহলাল বাইতের প্রেমবন্ধন জাগ্রত করে দিন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877